Tuesday, January 1, 2013

*** কয়েকটি কারণ আছে যা কখনই আপনাকে সফল ফ্রীলান্সার হতে দেবে না !!


সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু ফ্রীলান্সিং নিয়ে আজকের পোস্ট । আশা করি সবাই উপকৃত হবেন  

চলুন শুরু করি

বাংলাদেশের যুব সমাজকে বর্তমানে ফ্রীলান্স কি, কেন বা এই ধারার প্রশ্নগুলো তেমন কাউকে বুঝিয়ে বলতে হয় না বিশেষ করে যারা অনলাইন মুখী। কারণ গত কয়েক বছর ধরে আমাদের দেশে ফ্রীলান্সারদের যে আধিপত্য বিস্তার লাভ করেছে তা আমাদের সবারই জানাশুনার মধ্যেই। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে রয়েছে ভিন্নতা। ভিন্নতা বলতে সেই বিষয়গুলো, যেগুলো বা যারা চোখের সামনে ভালো মন্দ গুলো দেখাও বিচার করতে পারে না আসলেই তাঁর কি করা উচিৎ।

প্রিয় পাঠক! আমার পোস্টির শিরোনাম দেখে অনেকেই ভাবছেন আমি হয়তো অন্যদেরকে অবমূল্যায়ন করছি। আমার পোস্ট টাইটেল সম্পর্কে যদি আপনার চিন্তা এমন হয়ে থাকে তাহলে বাকী লিখা গুলো আপনার জন্য নয়। আমি মূলত পোস্ট লিখছি তাদের জন্য যারা তাদের চোখের সামনে ভালো কিছু দেখেও সেগুলোকে নিজের করে নিতে পারে না। বা বুঝে উঠতে পারে না আসলেই কিভাবে তাঁরা নিজেকে একজন সফল ফ্রীলান্সার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন।

কিছু কিছু বিষয় যা আপনি ফলো করতে পারলেই আপনার ফ্রীলাসার হওয়ার স্বপ্ন পূরণে অনেক সহায়তা করবে। দেখুন কারণ হিসেবে আমি এখানে যে বিষয়গুলোকে নেগিটিভলি উল্লেখ করবো সেগুলোকে আপনি বেশি কিছু না শুধু নিজের সাথে মিলিয়ে দেখেন এবং পারলে সেই বিষয়গুলোকে পজিটিভ করে নিন নিজের জন্য নিজের মত করে। তাহলে হয়তো আর পিছে ফিরে দেখতে হবে না। তো চলুন কারণ গুলো দেখে নেই যে কারণগুলোর কারণে আপনি কখনই একজন সফল ফ্রীলান্সার হতে পারবেন না-

১. অধ্যাবসায়হীনতাঃ

ফ্রীলান্সার হবার মূলমন্ত্র! এই গুনটি আপনার মাঝে নাই। আপনি অধ্যবসায়ী হতে পারেন নাই বা চেষ্টাও করেন নাই কখনও। এক বিষয় চিন্তা করেন, আপনি হয়তো অন্য সব সফল ফ্রীলান্সারদেরকে ফ্রীলান্সিং এর মাধ্যমে আয় করতে দেখে ভাবেন “আমিও সফল হবো” অথবা “আমি ঐ ভাইয়ের মতো এইটা হবো,ঐটা হবো”। দেখুন চাইলেই অনেক কিছু পাওয়া যায়, একথাটি অনেক ক্ষেত্রে সত্যি। তবে শুধু কি চাইলেই হবে কারণ এই কথাটি বলে আপনি যতই চেঁচামেচি করেন না কেন কোন লাভ হবে না। আপনার সফলতা কখনই আসবে না। কারণ আপনি যে ভাইয়ের মতো হইতে চাচ্ছেন সেই ভাই অনেক সাধনা করেই ঐটা হইছে বাট আপনি কি করছেন? সফলতা চাইতে হলে বা সফল হতে হলে আপনাকে বেশি কিছু করার দরকার হবেনা! শুধু দরকার আপনার পছন্দের বিষয়ে তীব্র “অধ্যবসায়”!একবার অধ্যবসায় শুরু করুণ। দেখবেন আপনার সফলতা আপনাকে হাত ছানি দিয়ে ডাকছে! 

২. সময়জ্ঞানহীনতাঃ

যারা অধ্যবসায়ী না তাঁদের কখনও সময়ের মূল্যায়ন করতে পারেন না। কারণ আপনি অধ্যবসায় শুরু করলেই আপনাকে সময় সম্পর্কে অনেক চিন্তা ভাবনা করে চলতে হবে। এমন অনেকেই দেখা যায়, যারা “টাকা আকাশে উড়ে” শুধু এই চিন্তা নিয়েই ফ্রীলান্স করতে আসেন। আসলে-ইতো টাকা উড়ে! কি বিশ্বাস হয় না? একবার ফ্রীলান্স সাইটগুলোতে দেখেন, প্রতিদিন কত কোটি ডলারের কাজ পোস্ট হয়। যার মধ্যে খুব বেশি হলে ৫০% কাজ সম্পূর্ণ হয় আর বাকীগুলান কর্মীর অভাবে বাতিল হয়ে যায়। আপনি কখনও একথায় বিশ্বাস-ই করবেন না কারণ আপনার সময়-ই নাই এসব সাইটে ভিজিট করে দেখবার। কারণ আপনি সময়জ্ঞানহীনতা নিয়ে অনেক ব্যস্ত থাকেন হয়তো!!! 

৩. অপ্রত্যাশিতভাবে টাকার পিছনে ছুটছেনঃ

আবার আসি “টাকা আকাশে উড়ে” নিয়ে। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে এমন কিছু ফ্রীলান্সার আছেন। যারা আসলেই “ফ্রীলান্স” বা “ফ্রীলাসিং” কথাটির অর্থই জানেন না। তাঁদের জন্য একটু সংক্ষেপে বলি-

আউটসোর্সিং বা ফ্রীলান্সিং কি?

আউটসোর্সিং বা ফ্রীলান্সিং বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ সহ বিশ্বের অনেক দেশে অর্থনৈতিক চালিকা শক্তির সবচেয়ে গুরুপ্তপূর্ণ ভিত্তি। বিশেষ করে যুব সমাজের কাছে যারা পড়াশুনার পাশাপাশি নিজের পকেট খরচটা চালাতে চান। একটা সময় দেখা যায় এই পেশায় তারা এমনভাবে জড়িয়ে পড়েন, যা কিনা তাদের ভবিষ্যতের আয় উন্নতির স্থায়ী পথ হয়ে যায়।

আউটসোর্সিং ও ফ্রীলান্সিং শব্দ দুটি আমরা একই জিনিস বুঝলেও। অর্থগত দিক থেকে এদের পার্থক্য আছে বটে, সংক্ষিপ্তভাবে বলছি এদের অর্থগত পার্থক্য। আউটসোর্সিং (Outsourcing) মানে বাহিরের মাধ্যম থেকে কোন কাজ বা তথ্য নিজের কাছে নিয়ে আসা বা নিজের কাজ বা তথ্য অন্যের কাছে পাঠিয়ে দেয়া। এক্ষেত্রে শুধু ফ্রীলান্সিংকে একক ভাবে আউটসোর্সিং বলা চলে না। যেকোনো বিষয় এর সাথে যুক্ত হতে পারে। এক্ষেত্রে স্থানীয়/নিজ দেশের কাজকে কিন্তু আউটসোসিং বলা চলে না।

আর ফ্রীলান্সিং (Freelancing) বলতে, মুক্ত বা স্বাধীনভাবে কাজ করার মাধ্যমকে বুঝায়। এক্ষেত্রে বলা চলে ফ্রীলান্সাররা কিন্তু কারো কাছে কুক্ষিগত নয়, এবং কখনও হতেও পারে না। ফ্রীলান্সাররা দেশ বিদেশের সকলের সাথে কাজ করে সম্পূর্ণ নিজের স্বাধীনতায়। কেউ তাকে বাধা বা কাজে বিঘ্নিত করতে পারে না। তবে হ্যাঁ, এক্ষেত্রে কেউ যদি নিজের চেষ্টায় না করে অন্য কোন ফ্রীলান্স দল/গ্রুপ আর আওতায় থেকে কাজ করে তবে তাকে মুক্ত বা স্বাধীন ফ্রীলান্সার বলা যাবে না। এক্ষেত্রে বলে রাখা ভাল, ফ্রীলান্স কি সম্পূর্ণ ফ্রি নিবন্ধন এর আওতায় পড়ে এবং বায়ারের কাজ গুলো ফ্রীলান্স কোম্পানি থেকে নিতে নগণ্য পরিমাণ অর্থ প্রদান করতে হয়ে।

দেখুন আপনি কাজ জানেন আপনার কাছে কাজ আসবে এটা কিন্তু ঠিক। তবে, আপনি যদি চুপ করে বসে থাকেন তাহলে কি কেউ আপনাকে জানবে? আপনাকে কাজ দিবে? টাকা কামাতে চাইলে আপনাকে আপনার কোয়ালিটি জানাতে হবে। প্রমাণ করতে হবে যে, আপনি কাজের জন্য বেস্ট! আর এভাবে না চলতে পারলে শুধু টাকার পিছনে ছুটাই হবে, ফ্রীলান্স করে টাকা কামানোর শখ কোনদিন পূরণ হবে না। 

৪. কাজ শিখার অমনোযোগিতাঃ

এই বিষয়টিতে সবচেয়ে বেশি অমনোযোগী নতুনরা। অনেকেই প্রশ্ন করে বসেন, “ভাই সব চেয়ে সহজ কাজ কোনটি? যেটাতে তেমন কিছু শিখতে হবে না”। আপনাকে জানতে হবে, কিভাবে লিখলে আপনাকে বায়ার কাজ দিবে বা লিখায় কতটা সৌন্দর্য দিতে পারলে বায়ার আপনাকে বেঁছে নিবে সবার মাঝে থেকে! অনেকে বলেন, ভাই আমি গ্রাফিক্স বা ওয়েব ডিজাইন শিখতে চাই কিন্তু কোথায় শিখবো, কার কাছে শিখবো জানি না। তাঁদের জন্য বলি, সৃষ্টিকর্তা তো আপনাকে অন্ধ করে পাঠান নাই, তাই না? আপনিতো অন্তত নেট ব্রাউজ/চালাতে পারেন। তাহলে গুগল করুন না আপনি যে বিষয়টি খুঁজছেন। যদি ওয়েব ডিজাইন টিউটোরিয়াল খুঁজেন তাহলে কীওয়ার্ড লিখুন “Free Web Design Tutorials” অথবা “Free Web Design Video Tutorials”। আমি ১০০% সিউর আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত বস্তুটি পেয়ে যাবেন। একটি কথা মনে রাখবেন, আপনি এখন ২০১২ সালে এসে যে জিনিস গুলো বাংলায় খুঁজে পাচ্ছেন সেগুলো কিন্তু কিছু বছর আগেও বাংলা ছিল না। আজ যারা সফল তাঁরা কিন্তু একটা সময় আপনার মতই ছিলেন। তাঁরা ইন্টারনেটের এই বিশাল ময়দান থেকে অনেক যুদ্ধ করে আজকের সফল ব্যক্তিত্ব হয়েছেন। আপনি তাঁদের মত হওন বা না হওন, নিজে খুঁজে নেয়ার চেষ্ঠাতো করবেন? না পেলে না হয় কার হলে নিবেন। নিজের চিন্তা এবং মেধা শক্তিকে কাজে লাগান। নাহলে, একটা সময় কোন কিছুই খুঁজে পাবেন না নিজের মাঝে থেকে! 

৫. ভ্রান্ত ধারনা থেকে ফ্রীলান্সিং শুরু করাঃ

ফ্রীলান্সিং নিয়ে ভ্রান্ত ধারনা কি, তা হয়তো এই সময়ে আর বলে দিতে হবে না। উপরে লিখা “আউটসোর্সিং বা ফ্রীলান্সিং কি?” এই বিষয়টি ভাল করে বুঝতে পারলে আপনাকে কেউ ভ্রান্ত করতে পারবে না। তারপরেও বলি, ধরুন, আপনি যাদেরকে ফ্রীলাসিং এ সাকসেস হতে দেখে নিজেও ফ্রীলান্সিং করতে আসলেন। কিন্তু, আপনি ভাল করে জেনে নিলেন না আসলেই আপনার ঐ ভাই বা বোনটি কি কাজ করে ফ্রীলান্সিং এ সাকসেস হয়েছেন। আর আপনার এই নাম জানার কারণেই বর্তমান সমাজে কিছু কুলাঙ্গাররা সুযোগ নিবে আপনার মূল্যবান সময়, শ্রম, অর্থ হাতিয়ে নেবার জন্য। বাস্তবিক ভাবে অনেককেই দেখেছি এখন দেখছি, কেউ কেউ নিজের সম্পত্তি বিক্রয় করেও টাকা ইনভেস্ট করে সেসব মূল্যহীন কাজে। একবার ভাবুনতো বা খোঁজ নিয়ে দেখুনতো, আপনি আপনার পাশের যে ভাই বা বোনটির সফলতা দেখে ফ্রীলান্সিং করতে নামলেন তিনি কাজ পেতে নিজের সম্পত্তি বিক্রয় করেছেন। এমনটা হতে পারে, তিনি কাজ শিখার জন্য টাকা ইনভেস্ট করেছেন কিন্তু কাজ পেতে নয়। 

পোস্টির মূল আলোচনা এখানেই শেষ! আবার আপনার ভাবে দেখবার পালা। উপরের পাঁচটি কারণের যে কোন একটি আপনার মাঝে থাকলে আপনি কখনই সফল ফ্রীলান্সার হতে পারবেন না। আপনি কি উপরের কোনটির সাথে আপনার মিল খুঁজে পান? যদি মিল খুঁজে পেয়ে থাকেন আর স্বপ্ন দেখেন সফল হবার, তাহলে আপনি ভুল পথে হাঁটছেন!

ফ্রিল্যান্সিং এর কিছু গুরুত্বপুর্ন টিপস !

বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং খুবই জনপ্রিয় একটি শব্দ। যারা অনলাইনে আয় করতে চান তাদের জন্য সব থেকে ভাল পদ্মতি হল ফ্রিলেন্সিং। আপনি যদি খুব ভাল আর্টিকেল লিখতে পারেন(অবশ্যই ইংরেজিতে), যদি খুব ভাল ডিজাইন করতে পারেন, অথবা প্রোগ্রামিং এ পারদর্শী হয়ে থেকে থাকেন তাহলে ফ্রিল্যান্সিং মাধ্যমে আপনিও অনলাইনে আয় করতে পারবেন। অনলাইনে আয়ের জন্য অনেক ধরনের পদ্মতি আছে, তবে নিরাপদ, সঠিক এবং সুনিশ্চিত অর্থ প্রাপ্তির জন্য ফ্রিল্যান্সিং এর বিকল্প আর কিছুই হতে পারে না।

ফ্রিল্যান্সিং  এর কাজের জন্য অনেকগুলো ওয়েব সাইট রয়েছে। তবে এর মধ্যে সব থেকে ভাল সাইটগুলো হলঃ odesk.com. vworker.com, freelancer.com । এই সাইট গুলোর সবগুলোই আপনাকে অর্থ প্রাপ্তির ব্যাপারটি সুনিশ্চিত করে থাকে। তাই কাজ ঠিক মত করে দিতে পারলে , টাকা পেতে আপনার কোনই সমস্যা হবে না। তবে যেকোন সাইটে কাজ শুরু করার পুর্বে সেই সাইটের নিয়ম-কানুন, বাংলাদেশে অর্থ প্রাপ্তির পদ্মতি সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত হয়ে তার পরে কাজ শুরু করলে ভাল হয়। odesk.com. vworker.com, freelancer.com এই তিনটি ওয়েব সাইট বাংলাদেশে পেমেন্ট প্রদান করে থাকে।

ফ্রিল্যান্সিং  এর সব থেকে বড় সুবিধা হল- আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী কাজ করতে পারবেন এবং সেটাও আপনার পছন্দীয় সময়ে। আহা… ভাবতেই ভাল লাগে…। কেউ আপনার উপরে জোর করে কিছু চাপিয়ে দিতে পারবে না। অর্থ্যাৎ আপনিই আপনার ইচ্ছা মত সব কিছু সাজিয়ে গুছিয়ে করার পুর্ন স্বাধীনতা পাচ্ছেন ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে।

১।  একজন্ ফ্রিল্যান্সার হিসাবে আপনার কাছে সব থেকে বড় এবং গুরুত্বপুর্ন মূলধন হল “সময়”। ফ্রি-ল্যান্সারদের সব সময় মনে রাখতে হবে, “আপনি আপনার সময় ক্লায়েন্ট  এর জন্য ব্যয় করছেন, অতএব ক্লায়েন্টকে অবশ্যই এর জন্য সঠিক এবং উপযুক্ত মুল্য প্রদান করতে হবে”।


এখানে বলে রাখা ভাল – কাজ পাওয়ার আগে অনেক ক্লায়েন্ট ডেমো দেখতে চান, সেক্ষেত্রে আপনার পুর্ববর্তী কাজের লিঙ্কগুলো তাকে দেখান এবং বলুন যে আপনি এ ধরনের কাজ আগেও করেছেন। অর্থ প্রাপ্তি সুনিশ্চিত হবার পুর্বে কক্ষোনই আপনার কাজ ক্লায়েন্টকে পাঠাবেন না। এতে আপনার আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে।

২। নতুন কিছু শিখুন এবং কাজে পরিধিকে বাড়ানঃ ফ্রিল্যান্সার হিসাবে আপনাকে মনে রাখতে হবে - ” You are an one man army!”. অর্থ্যাৎ আপনাকে সবকিছু সুন্দরভাবে সামলাতে (ম্যানেজ করতে) হবে। প্রজেক্টে বিড করা থেকে শুরু করে, কাজ শেষ করা অবধি সবা কিছু আপনাকেই করতে হবে। এর পরে যখন পেমেন্ট হাতে পাবেন- তখন তার পুরোটার আপনি নিজেই পাবেন :)


ফ্রিলেন্সারদের কে সব সময় নতুন নতুন সমস্যার সম্মুক্ষীন হতে হয়। এটা অবশ্য খারাপ না… কারন আপনি সমস্যার সম্মুক্ষীন না হলে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন না। ছোট্ট একটি টিপস বলছি – যারা ওয়েব ডিজাইনের কাজ ভাল জানেন তারা প্রথমে যে কোন একটি সাইটে গিয়ে প্রজেক্ট এ বিড করুন। আপনি যদি কিছু মানসম্মত ডিজাইন ক্লায়েন্টকে দেখাতে পারেন তাহলে কাজ পেতে আপনার বেশী দিন লাগবে না। কয়েকটি কাজ করার পর যখন কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন হবে তখন অন্যান্য সাইটে গিয়ে ঢুঁ  দিয়ে জেনে আসুন “আপনার কাজের মার্কেট ভ্যালু” কেমন। যদি অন্যান্য সাইটে কাজের মার্কেট ভ্যালু বেশী হয় তাহলে আপনি যে কোন সময় নতুন সাইটে চলে যেতে পারবেন। আর সাথে থাকবে আপনার পুর্বরতী কাজে অভিজ্ঞতা। ফলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আপনি নতুন কাজ পেয়ে যাবেন।

৩। কাজের কোয়ালিটি(মানের) দিকে লক্ষ্য রাখুনঃ শুধু টাকার কথা ভেবে যদি কাজের মানের কথা ভুলে যান তাহলে জেনে রাখুন ফ্রি-ল্যান্সিং এ আপনি খুব বেশী সুবিধা করতে পারবেন না !! হ্যা এটা সত্য যে আমাদের সবারই মুল লক্ষ্য হল টাকা উপার্জন করা, তবে তা হতে হবে ক্ল্যায়েন্ট কে ভাল মানের কাজ প্রদান করার মাধ্যমে। আপনি যদি ভাল মানের কাজ ক্লায়েন্টকে প্রদান করতে পারেন তাহলে সে খুশি মনে আপনাকে পে করবে। অনেক সময় ক্লায়েন্টকে খুশি করতে পারলে বোনাস পাবার সম্ভাবনাও থাকে।


এছাড়াও ক্লায়েন্ট খুশি হলে আপনাকে বিড করে সময় নষ্ট করতে হবে না। কারন, আপনি একজন ফিক্সড ক্লায়েন্টকে ম্যানেজ করতে পারলে উনি আপনাকে নিয়মিতভাবে কাজ দিতে থাকবেন। আর কাজ করে দিলেই আপনি পেয়ে যাবেন আপনার পেমেন্ট।আর কিছু গুরুত্বপুর্ন বিষয় অবশ্যই মনে রাখা দরকার। আর তা হল -

- আপনাকে যে কাজটি করে দেওয়ার জন্য বলা হবে, সেটি ডেলেভারী দেওয়ার সময় যেন “ত্রুটি মুক্ত” (Bug Free) হয়।

- কাজ শেষ হয়ে গেলে-ক্লায়েন্টকে ফিডব্যাক ও রেটিংস দেওয়ার জন্য অনুরোধ করুন। এগুলো আপনাকে পরবর্তী কাজ পেতে সাহায্য করবে।

- হুট করে পেমেন্ট রেট না বাড়িয়ে, আপনার কাজের অভিজ্ঞতা এবং রেটিংস এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে আস্তে-ধীরে বাড়ান।

- যে সাইটে কাজ করছেন সেখানে নিয়মিত আপনার প্রোফাইলে আপডেট করুন।

- নতুন টেকনোলজির সাথে পরিচিত হোন এবং নিজেক আপডেট রাখুন। এতে নতুন কাজ পেতে সুবিধা হবে।

৪। কাজ বুঝে বিড করুনঃ আপনি নিজেই আপনার নিজের বিচারক, অর্থ্যাৎ আপনি নিজে খুব ভাল করে জানেন যে – আপনি কোন কাজটি করতে পারবেন, আর কোনটি পারবেন না। অহেতুক পারবেন না , এমন কাজে বিড করে সময় নষ্ট না করাটাই শ্রেয়। কাজ শুরু করার পুর্বেই ক্লায়েন্ট এর সাথে ভাল মত কথা বলে কাজের ধরন সম্পর্কে বুঝে নিন। এতে করে কাজে ভুল হবার সম্ভাবনা কমে যাবে। কাজ শুরুর পুর্বে আপনি নিজে নির্ধারন করে নিবেন- কাজটি শেষ করতে কত সময় লাগবে। আপনার কাছে যদি মনে হয় কাজটি শেষ করতে ১০ঘন্টা/২দিন লাগবে- তবে চেষ্টা করবেন, যাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই যেন কাজটি শেষ হয়ে যায়। এর ফলে ক্লায়েন্টকে আপনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজটি ডেলীভারী দিতে পারবেন :)

৫। ভাল ক্লায়েন্ট যোগাড় করুন এবং তাদের সাথে সু-সম্পর্ক বজায় রাখুনঃ ইন্টারনেটে “ফেক” লোকের কোন অভাব নেই! এজন্য কাউকে বিশ্বাস করতে ইচ্ছা হয় না :) তাই আমি মনে করি ভাল একজন ক্লায়েন্ট পাওয়া অনেকটা ভাগ্যের ব্যাপার।


এজন্য একটি কাজ পাওয়ার পরে চেস্টা করুন আপনার ক্লায়েন্ট,ফিক্সড একজন ক্লায়েন্ট” বানানোর জন্য। কক্ষোনই ক্লায়েন্টের কাছে মিথ্যা কথা বলবেন না, কিংবা মিথ্যা বলার চেস্টাও করবেন না। আপনার সমস্যাগুলো তার কাছে সুন্দর করে উপস্থাপন  করুন, এবং তাকে বুঝিয়ে বলুন। কাজের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তার সাথে সু-সম্পর্ক বজায় রাখুন। এতে করে তার কাছে আপনার গ্রহনযোগ্যতা আরও বাড়বে। ক্লায়েন্টকে আপনার ম্যাসেঞ্জারে যেমন – Yahoo, GTalk, Skype এ রাখুন,যাতে তাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করতে পারেন।এভাবে যদি আপনি ৩/৪ জন “ফিক্সড ক্লায়েন্ট“ম্যানেজ করে ফেলতে পারেন তাহলে আপনাকে কক্ষোনই কাজের জন্য বিড করতে হবে না। তারাই নিয়মিত ভাবে আপনাকে কাজ দিবে। এটাই হল ফ্রিল্যেন্সিং এর সব থেকে বড় সিক্রেট।

*** ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস সাইটে কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

রেটিং(Rating): একটি কাজ সম্পন্ন হবার পর ক্লায়েন্ট কাজের ফলাফলের উপর ভিত্তি করে প্রোভাইডারকে ১ থেকে ১০ এর মধ্যে রেটিং দেয়। এখানে সর্বোত্তকৃষ্ট রের্টিং হচ্ছে ১০ এবং সর্বনিম্ন রেটিং হচ্ছে ১ এবং নতুন কাজ পাবার ক্ষেত্রে এই রেটিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । তাই সবসময় ১০ রেটিং পাওয়ার জন্যে প্রজেক্টের রিকোয়ারমেন্ট পরিপূর্ণ ভাবে এবং দক্ষতার সাথে সম্পন্ন করা উচিত।

রেংকিং(Ranking): একটি ফ্রিল্যান্সিং সাইটে রেজি: কৃত সকল প্রোভাইডারের মধ্যে একজন নির্দিষ্ট প্রোভাইডারের অবস্থান কত জানা যায় রেংকিং এর মাধ্যমে। সাধারণত একজন প্রোভাইডারের গড় রেটিং এবং সে কত বেশি ডলারের কাজ করেছে তার উপর ভিত্তি করে রেংকিং নির্ধারণ করা হয়। রেটিং এর মত রেংকিংও নতুন কাজ পাবার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।যার রেংকিং যত সামনের দিকে তার কাজ পাবার সম্ভাবনা অন্যদের চাইতে বেশি।

ডেডলাইন(Deadline): প্রত্যেক পজেক্ট শেষ করার একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা বা ডেডলাইন সময় থাকে। এই সময়ের পূর্বে অবশ্যই কাজ শেষ করতে হবে।কোন প্রোভাইডার যদি ডেডলাইনের পূর্বে কাজ শেষ না করতে পারে তাহলে বায়ার ইচ্ছে করলে তাকে কোন মূল্য পরিশোধ না করে সম্পন্ন কাজটি নিয়ে যেতে পারে।উপরক্ত ক্লায়েন্ট সেই   প্রোভাইডারকে  একটি নিম্নমানের রেটিং দিয়ে দিতে পারে। তাই কোন প্রজেক্টের  ডেডলাইন সময় প্রয়োজনের তুলানায় কম হবে কাজ শুরু করার র্পূবেই বায়ারকে অনুরোধ করে বাড়িয়ে নেয়া উচিত।

মেডিএশন(Mediation): একটি প্রজেক্ট চলাকালীন সময় বায়ার এবং প্রোভাইডারের মধ্যে কোন সমস্যা হলে তা সমাধানের জন্য মেডিএশন এর ব্যবস্থা রয়েছে।এই পদ্ধতিতে সাইটের যথাযথ কতৃপক্ষ উভয় পক্ষের সাথে আলোচনা করে এবং সমাধানের কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়।

আজকের বিষয়:

Elance হল অন্যতম বৃহত্তর অনলাইন ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস।বর্তমানে এখানে সবচেয়ে ভালো কাজ পাওয়া যায় এবং এখানে কাজের টাকার পরিমানটাও অনেক বেশি। এখানেও চুক্তি ভিত্তিক অথবা ঘণ্টা প্রতি কাজ পাওয়া যায়। বাংলাদেশের কম সংখ্যক লোকই elance এ কাজ করে থাকে। কারন এখানে বেশি সংখ্যক কাজের জন্য অ্যাপ্লাই করতে সাবস্ক্রিপশন ফি দিতে হয়। কিন্তু এবং দুনিয়াজুড়ে নামকরা সকল ফ্রিল্যান্সিং কোম্পানি elance এ কাজ করেন ।
এক্ষেত্রে কিন্তু আমাদের বাংলাদেশিরাও পিছিয়ে নেই । elance এ বাংলাদেশীদের অবস্থান মোটামুটি ৪ নাম্বারে (ইন্ডিয়া, উক্রেইন, পাকিস্তান, বাংলাদেশ)। elance এ সব চেয়ে বড় যে সুবিধা আছে সেটা হল ‘ESCROW System’ . এটি এমন একটা ব্যবস্থা , যেখানে ক্লায়েন্ট ও প্রোভাইডার , দুই পক্ষেরই একটা নিরাপদ পেমেন্ট ব্যবস্থা থাকে। এই সিস্টেম এ টাকা প্রথমে এখানে জমা হয় , এবং কাজ শেষে ক্লায়েন্ট টাকা ছাড় করে দেন। কিন্তু কোন কারনে কোনো পক্ষ যদি সমস্যা সৃষ্টি করে তাহলে elance এ আপিল করা যায় , তখন elance সকল মেসেজ পরীক্ষা-নিরিক্ষা করে জয়ী পক্ষকে টাকা দিয়ে দেয়।
http://www.Elance.com

*** বিড ছাড়াই অনলাইনে অর্থ উপার্জন !!!

অনলাইনে অর্থ উপার্জনের জন্য রয়েছে অসংখ্য উপায়। এসবের মধ্যে রয়েছে ফ্রিল্যান্সিং, গুগলের বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের মাধ্যমে আয়, ইকমার্স, আর্টিকেল রাইটিং ইত্যাদি। তবে আমরা সচরাচর যেটি সম্পর্কে বেশি শুনে থাকি সেটি হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং। এখানে বিডের মাধ্যমে কাজ পেতে হয়। আমাদের দেশের অনেক ফ্রিল্যান্সার রয়েছে যারা এ আউটসোর্সিং করে প্রচুর পরিমাণ অর্থ উপার্জন করছে। আউটসোর্সিং করার মাধ্যমে তারা তাদের ক্যারিয়ারকে করেছে সাফল্যমন্ডিত। যদিও বিডের মাধ্যমে কাজ পাওয়াটা একটু কঠিন। কিন্তু একজন ডিজাইনার যদি বিডের মাধ্যমে কাজ না পান, তারপরও সে তার তৈরীকৃত ডিজাইনগুলি বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটপ্লেসে বিক্রি করেও অর্থ উপার্জন করতে পারেন। তেমন একটি মার্কেটপ্লেস graphicriver.net হচ্ছে । আজ আমরা  এই সাইটটি সম্পর্কে আলোচনা করব।

মনে করুন আপনি একজন ডিজাইনার। আপনি ভাবলেন এ ডিজাইনের কাজটি করে আপনি অনলাইন থেকে অর্থ উপার্জন করবেন। প্রথমেই চিন্তা করলেন ফ্রিল্যান্সিং করবেন। সে অনুযায়ী বিভিন্ন ডিজাইনের কাজে বিড করতে শুরু করলেন। যদি আপনার ভাগ্য ভাল হয় তাহলে অল্প কিছু বিড করেও কাজ জুটে যেতে পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় নতুন ডিজাইনারদের জন্য কাজ পাওয়াটা বেশ কঠিন। তো আপনার যোগ্যতা থাকা সত্বেও আপনি যদি প্রথম দিকে কাজ না পান তাহলে আপনার মনে স্বাভাবিকভাবেই হতাশার সৃষ্টি হতে পারে। দেখা গেল এ হতাশার কারণেই আপনি বিড করা বাদ দিয়ে দিলেন এবং অনলাইনে উপার্জনের আশা ছেড়ে দিলেন। এক্ষেত্রে আমি শুধু বলব আপনার হতাশ হওয়ার মত কিছুই হয়নি। কারণ ডিজাইনারদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং ছাড়াও অনলাইনে উপার্জনের আরো অনেক উপায় রয়েছে।

1

আপনি আপনার তৈরীকৃত ডিজাইনগুলি বিক্রি করেও অনলাইন থেকে আয় করতে পারেন। অনলাইনে আপনার ডিজাইন বিক্রি করার জন্য বেশ কিছু সাইট রয়েছে। এসব সাইটের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য একটি সাইট হচ্ছে graphicriver.net. সহজ কথায় গ্রাফিক রিভার একটি অনলাইন বাজার। তবে এখানে আপনি প্রথাগত বাজারের ন্যায় একটি ডিজাইন একবার নয় বরং একাধিকবার বিক্রি করতে পারবেন। আপনার কাজ শুধু সুন্দর একটি ডিজাইন তৈরী করে জমা দেওয়া। ডিজাইনটি গ্রাফিক রিভার সাইট কতৃক গৃহীত হলে বাকি কাজ ওরাই আপনার জন্য করে দেবে। এরপর আপনার ডিজাইনের জন্য একটি মূল্য নির্ধারণ করা হবে। এ মূল্যটি আপনার ডিজাইনের কোয়ালিটির উপর ভিত্তি করে $১ থেকে $১০ পর্যন্ত হতে পারে। প্রাথমিকভাবে প্রতিবার বিক্রির জন্য আপনার ডিজাইনের নির্ধারিত মূল্যের 40% আপনাকে প্রদান করা হবে।

2

কি ডিজাইন করবেন

চলুন এবার দেখা যাক আপনি কি কি ডিজাইন এখানে সাবমিট করতে পারবেন। বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন এখানে সাবমিট করা যায় যেমন লোগো ডিজাইন, বিজনেস কার্ড, ব্রোশিওরস, ডিজাইন টেমপ্লেটস, ওয়েব এলিমেন্ট,  অবজেক্ট গ্রাফিক, টেক্সারস, ভেক্টর গ্রাফিকস, আইকনস ইত্যাদি। এছাড়াও আপনি ওয়েব ডিজাইনের বাটন, ফরমস, নেভিগেশন বার ইত্যাদি তৈরী করে আপলোড করতে পারেন।
3

আপনি এখান থেকে কী পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারবেন সে আলোচনায় আমি পরে যাব। তার আগে আমি আরও কিছু বিষয় উল্লেখ করতে চাই। আপনারা নিশ্চয় জানেন গ্রাফিক রিভার এনভাটো মার্কেটপ্লেসের আওতাভুক্ত একটি ওয়েবসাইট। এনভাটো মার্কেটপ্লেসের ডিজাইন সংক্রান্ত আরও কিছু সাইট রয়েছে। যাহোক বন্ধুগণ আমরা আমাদের মুল আলোচনায় ফিরে যাই। আপনি যদি গ্রাফিক রিভারে আপনার কোন ধরণের জিজাইন আইটেম বিক্রি করতে চান তাহলে আপনাকে আপনার ডিজাইনের কাজের ব্যাপারে কিছু লক্ষ্যমাত্রা আগে থেকেই নির্ধারণ করে রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ । এটি আপনার মধ্যে আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে তুলবে যা আপনার কাজটি সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে সহায়ক হবে।

যাদের গ্রাফিক রিভার সাইটে একাউন্ট নেই তারা আজই একটি একাউন্ট খুলে রাখতে পারেন। এখানে সাইনআপের প্রক্রিয়া অন্যান্য সাইটের মতই। তবে সাইনআপ করার সময় কয়েকটি বিষয়ের প্রতি খেয়াল রাখবেন। নিম্নে বিষয়গুলি উল্লেখ করা হল:

১. প্রথমে ইউজারনেম, ইমেইল এবং প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে গ্রাফিকরিভার সাইটে সাইন আপ করুন।

২. এরপর আপনার প্রোফাইল পেজটি পূরণ করুন আকর্ষণীয়ভাবে (এক্ষেত্রে আপনি নিজে কেমন সেটি না লিখে বরং কাস্টমারদের চাহিদাকে প্রাধান্য দিয়ে লিখুন।)

৩. এসমস্ত সেটিংস কমপ্লিট হয়ে গেলে আপনার ডিজাইন আপলোড করুন।

৪. একবার ডিজাইন আপলোড করা হলে গ্রাফিকরিভার সাইট কর্তৃপক্ষ ৭২ ঘন্টা সময়ের মধ্যে আপনাকে জানিয়ে দিবে আপনার ডিজাইনটি গৃহীত হয়েছে কি হয়নি।

৫. আপনার ডিজাইনটি একবার গৃহীত হয়ে গেলে সাইট কর্তৃপক্ষ এটির একটি মূল্য নির্ধারণ করে দেবে এবং এটি এই বিশাল মার্কেটপ্লেসে বিক্রয় শুরু হবে।

4

আয়ের পরিমাণ

মনে করুন আপনার আপলোডকৃত ডিজাইনটি গৃহীত হল এবং এটির মূল্য ধরা হল ২ ডলার। তাহলে এটি যদি মাসে ৩০ বার বিক্রি হয় তবে মাস শেষে আপনার আয়ের পরিমান দাড়াবে ৩০x২=৬০ ডলার। তো আপনি যদি মাসে ৫ টি ডিজাইন আপলোড করতে পারেন এবং সবগুলিই সাইট কতৃক গৃহীত হয় তাহলে আপনার মাসিক আয় হবে ৫x৬০=৩০০ ডলার।

পরিশেষে বলব যথাসম্বভ সুন্দর একটি ইউনিক ডিজাইন করুন। হতে পারে এটি কোন ভেক্টর গ্রাফিকস, আইকনস ইত্যাদি। আপনার ডিজাইন যত নান্দনিক এবং আকর্ষণীয় হবে এটির মূল্য তত বেশি ধরা হবে এবং বিক্রির পরিমানও অনেক বেড়ে যাবে।


*** ফ্রিল্যান্সিং কি?

গতানুগতিক চাকুরীর বাইরে নিজের ইচ্ছামত কাজ করার স্বাধীনতা হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং। ইন্টারনেটের কল্যানে এখন আপনি খুব সহজেই একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারেন। এখানে একদিকে যেরকম রয়েছে যখন ইচ্ছা তখন কাজ করার স্বাধীনতা, তেমনি রয়েছে বিভিন্নধরনের কাজ বাছাই করার স্বাধীনতা। আয়ের দিক থেকেও অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং এ রয়েছে অভাবনীয় সম্ভাবনা। এখানে প্রতি মূহুর্তে নতুন নতুন কাজ আসছে। প্রোগ্রামিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েবসাইট, গেম, 3D এনিমেশন, প্রোজেক্ট ম্যানেজমেন্ট, সফ্টওয়্যার বাগ টেস্টিং, ডাটা এন্ট্রি – এর যেকোন এক বা একাধিক ক্ষেত্রে আপনি সফলভাবে নিজেকে একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে তৈরি করে নিতে পারেন। তবে প্রথমদিকে আপনাকে একটু ধ্যর্য এবং কয়েকটি বিষয় মাথায় রেখে নিজেকে প্রস্তুত করে নিতে হবে। এই প্রতিবেদনটি তাই এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে আপনি একজন নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে নিজেকে সফলভাবে প্রকাশ করতে পারেন।

                                                                    আমাদের ফেসবুক পেজ:

                            

Sunday, December 23, 2012

*** দেশের বেকার জনগোষ্ঠীকে ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং-এ নিয়োজিত করার মাধ্যমে সম্ভব দেশের অর্থনৈতিক ব্যাপক উন্নয়ন


ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং- এ বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণ সাম্প্রতিক সময়ে এক ধরণের বিপ্লবে রূপ নিয়েছে। বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ফ্রিল্যান্সিং বা আউটসোর্সিং-এ অংশগ্রহণের যেই অদম্য ঝোঁক লক্ষ্য করা যায় তা নিঃসন্দেহে দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে ও ভবিষ্যতেও রাখবে। গত কয়েক বছরেই বাংলাদেশে কেবল ফ্রিল্যান্সাররা আয় করেছেন ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আরও নতুনদের ফ্রিল্যান্সিং-এ অংশগ্রহণের ফলে এই অঙ্ক প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে।

আপনি অবাক হতে পারেন, কীভাবে এই বিপ্লব ঘটে গেল? গত বছরগুলোতে তো বাংলাদেশ সরকার এ দেশের মানুষকে ফ্রিল্যান্সিং-এ উদ্বুদ্ধ করেনি। বরং ফ্রিল্যান্সিং কাজে অংশ নেয়া ও অর্থ প্রাপ্তি ছিল বেশ ঝামেলার কাজ। কিন্তু সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ না থাকলে অনেকটা চুপিসারেই এ দেশের তরুণ ও বেকারদের মধ্যে এই ফ্রিল্যান্সিং বিপ্লব গড়ে উঠেছে। আর সরকারের গত কয়েক বছরের সব কিছুর পেছনে “ই” জুড়ে দেয়ার প্রচেষ্টায় এই ফ্রিল্যান্সিং পেয়েছে ব্যাপক সমৃদ্ধি।

কিন্তু কেন এমনটা ঘটেছে? আমরা যদি খুলনার পরিস্থিতির দিকে লক্ষ্য করি, তাহলে দেখবো সেখানকার অনেক শিল্পই বন্ধ হয়ে গেছে দুর্নীতি ও টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ার কারণে। সেখানকার ব্যবসায়ীরা খুব একটা ভালো নেই। আর তরুণ প্রজন্ম নিজেদের উন্নতির জন্য পড়াশোনার দিকে বেশি জোর দিয়েছে। কিন্তু পড়াশোনা শেষে বা এ সময়ে চাকরির বাজারের বেহাল দশা। শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন প্রজন্মকে প্রয়োজনমতো চাকরি দিতে পারছে না। আর এই প্রজন্মের তরুণদেরও খুলনা না ছেড়েই কিছু একটা করার প্রচেষ্টা ছিল। সেভাবেই ধীরে ধীরে ফ্রিল্যান্সিং জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

তবে ফ্রিল্যান্সিং-এর ক্ষেত্রে বেশ এগিয়ে গেলেও এখনও এই খাতে লেগে থাকা মানুষের দুর্দশা কমেনি। তারা এখনও অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এর মধ্যে একটি রয়েছে পেপাল পেমেন্ট গেটওয়ে সুবিধা। ফ্রিল্যান্সার ও আউটসোর্সিং পার্টনারদের যাবতীয় সুবিধাদি দেয়া গেলে দেশে এই খাত আরও অনেকখানি এগিয়ে যাবে। কিন্তু আমাদের দেশের সরকার কখনোই এসব ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকেনি। এসইএ-এমই-ডব্লিউই ফাইবার অপটিক ক্যাবল কানেকশন নেয়ার ক্ষেত্রে দু’বার পিছিয়েছে বাংলাদেশ। দেশের তথ্য বিদেশে পাচার হয়ে যাবে এমন অদ্ভূত যুক্তিতে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে সংযুক্ত হয়নি তখন।

বর্তমানে বাংলাদেশ তথ্য-প্রযুক্তির খাতে অনেক এগিয়ে আছে। বিশেষ করে ইন্টারনেটের দিক দিয়ে বেশ এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। কিন্তু সত্যিকারের অনলাইন সুবিধাদি এখনও এ দেশে পুরোপুরি চালু হয়নি। এমনকি আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের তুলনায়ও আমরা অনেকখানি পিছিয়ে আছি।

ফ্রিল্যান্সিং বা আউটসোর্সিং এমন একটি শিল্প যেখানে আয় হচ্ছে অবিশ্বাস্য ৩.৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। কিন্তু বাংলাদেশ এর ১ শতাংশও নিতে পারছে না। যদিও ঢাকা আউটসোর্সিং শহরগুলোর মধ্যে শীর্ষের দিকে আছে, তবুও সার্বিক বিবেচনায় অতোটা এগিয়ে নেই বাংলাদেশ। আজ আমাদের দেশে ফ্রিল্যান্সিং-এর যেই অবস্থা, ভারতে ১০ বছর আগে সেই অবস্থা ছিল। অর্থাৎ, আমরা ভারতের তুলনায় এখনও এক দশক পিছিয়ে আছি।


তবে তার মানে এই নয় যে, সবসময়ই ভারতের তুলনায় আমাদের এগিয়ে থাকতে হবে। আমাদের দেশে প্রতিভাবান ও অভিজ্ঞ মানুষ রয়েছেন যারা এই দেশকে ভারতের সমপর্যায় কেন, ভারতকে ছাড়িয়ে আরও বেশি অগ্রসর করে নিতে পারবে। কিন্তু এ জন্য তাদের প্রয়োজন সুযোগের। যদি আমরা তাদের সুযোগ করে দিতে পারলেই তারা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। আর এই সুযোগ আসতে হবে সরকার ও বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। যদি আমরা সেই সুযোগ তৈরি করতে না পারি, তাহলে ভিয়েতনাম বা ফিলিপাইনের মতো দেশগুলো এই খাতে রাজত্ব করেই যাবে। আর যদি আমরা সুযোগ তৈরি করতে পারি, যদি আমরা এই আউটসোর্সিং শিল্পের মাত্র ১ শতাংশও পেতে সক্ষম হই, তাহলে হয়তো পোশাক শিল্প বা প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের চেয়েও ছাড়িয়ে যাবে আউটসোর্সিং খাতে এ দেশের আয়ের অঙ্ক।

আপনি যদি আমাদের দেশের সমাজব্যবস্থার দিকে লক্ষ্য করেন, তাহলে দেখবেন অনেক পরিবর্তন সাধিত হওয়ার পরও আমরা খুব একটা স্বাধীন সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারিনি। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষ এখনও অনেক রক্ষণশীল। চলাচলের ক্ষেত্রে বাসে এখনও নারী-পুরুষ বিভেদে বসার ব্যবস্থা রয়ে গেছে। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর নারীরা এখনও সমাজে অবাধে চলাফেরা করতে পারেন না বললেই চলে। পড়াশোনার ক্ষেত্রেও নারীরাই ‘বাদ’ পড়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে। আর যারা কোনোভাবে পড়াশোনা চালিয়ে নিয়ে যান, তাদের মধ্যে বেশিরভাগের ক্যারিয়ারেরই ইতি ঘটে তাদের প্রথম বা দ্বিতীয় সন্তানের জন্মের পরপরই। ক্যারিয়ারের এই ইতিকে কেউ ভালো বা খারাপ বলে আখ্যায়িত করতে পারবেন না। কেননা, নারীর দ্বারা সন্তান বড় করে তোলা বহু শতাব্দীর পুরনো ঐতিহ্য। এমনকি উন্নত দেশেও নিম্ন ও মধ্যবিত্ত নারীরা সন্তান লালন-পালনের স্বার্থে ঘরেই থাকেন। সব মিলিয়ে দেখা যায়, একটি পর্যায়ে গিয়ে নারীর সব মনোযোগ ঘরেই সীমাবদ্ধ থেকে যায়।

অথচ আমাদের দেশের প্রায় ৪৮ শতাংশই নারী। আপনি যদি এই বিপুল শতাংশ জনশক্তিকে আয়ের জন্য কাজে লাগাতে না পারেন, তাহলে দেশের সার্বিক উন্নতিও অনেকখানিই পিছিয়ে যাবে। আর আমাদের সমাজব্যবস্থা অনুযায়ী মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণীর নারীকে ঘরে রেখেই অর্থ উপার্জনের ব্যবস্থা করে দেয়ার বোধহয় একটিই উপায় আছে। আশা করি আপনারা সবাই জানেন কী সেই উপায়।

আবার, আমাদের দেশে বয়স্করাও একটা সময় পর তাদের পরবর্তী প্রজন্মের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। শারীরিকভাবে কাজের চাপ নিতে না পারায় বা বয়সসীমা অতিক্রান্ত হয়ে যাবার ফলে তারা কেবল অন্যের উপর নির্ভরশীলই হয়ে পড়েন না, একই সঙ্গে দেশের অর্থ উপার্জনে লিপ্ত জনগণের মধ্য থেকে বাদ পড়ে যান যেখানে তারা আর কখনোই ফিরে আসেন না। আমরা কীভাবে সেসব বয়স্ক মানুষদের কোনো শারীরিক পরিশ্রমের চাপ না দিয়ে আবারও স্বনির্ভরশীল ও অর্থ উপার্জনে সক্ষম করে তুলতে পারি? আশা করি আপনি এই প্রশ্নের জবাবও জানেন।

অন্যদিকে আমাদের দেশে প্রতিবন্ধী মানুষের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। আমরা প্রায়ই ভাবি, আমাদের জনসংখ্যার সবচেয়ে দুর্বলতম অংশ হচ্ছে এই প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী। কিন্তু আমাদের মনে রাখা উচিৎ, সব প্রতিবন্ধী মানুষই কিন্তু সবদিক দিয়ে প্রতিবন্ধী নন। আমি এমনও শারীরিক প্রতিবন্ধকতার শিকার মানুষ দেখেছি যাদের রয়েছে অবিশ্বাস্য প্রতিভা, জ্ঞান এবং দক্ষতা। কিন্তু তারা অন্যদের মতো সাধারণ কর্মস্থলে চাকরি করতে পারেন না কেবল তাদের শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে। এই চিত্র বদলানোরও যেন কোনো উপায় নেই। কিন্তু আমরা কিন্তু তাদেরও দেশের অর্থোপার্জনে লিপ্ত জনগোষ্ঠীর আওতায় নিয়ে আসতে পারি। আর সেটাও কীভাবে সম্ভব তা আপনি ভাবতেই পারছেন।

আমরা সাধারণত ফ্রিল্যান্সিং বা আউটসোর্সিং নিয়ে কথা বলার সময় তরুণ প্রজন্মকেই বুঝিয়ে থাকি। হ্যাঁ, তারাই আমাদের দেশের ভবিষ্যত। কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং-এর কাজে যদি বেকার জনগোষ্ঠীর সবটুকুকে কাজে লাগানো যায়, তাহলে আমাদের দেশের অর্থনীতি কোথায় যেতে পারে তা ভেবে দেখুন।

কাজেই, বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর করতে হলে সরকারকে অবশ্যই এই শিল্পকে যত দ্রুত সমৃদ্ধ করে তোলা সম্ভব সে লক্ষে কাজ করতে হবে। আগেই বলা হয়েছে, এই খাতে অর্থ দেশে আনায় এখনও অনেক বড় বাধা রয়েছে। পেয়জা সাম্প্রতিক সময়ে চালু হলেও আন্তর্জাতিক বাজারে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় মাধ্যম পেপাল আসবো আসবো করেও দেশে এখনও আসেনি। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকও খুব একটা সক্রিয় ভূমিকা রাখছে না। তবে ইদানীং সবকিছু বেশ দ্রুত এগোচ্ছে তাই এই আশা করা যায় যে শিগগিরই আমরা পেপালসহ যাবতীয় সুবিধাদি উপভোগ করতে পারবো। হ্যাঁ, দেশে এখনও দুর্নীতিগ্রস্থ মানুষ রয়েছেন, মানি লন্ডারিং-এ লিপ্ত মানুষ রয়েছেন, কিন্তু তাদের জন্য পুরো জাতির সামনে পরে থাকা সুযোগ অপেক্ষা করতে পারে না।

গত ৮-১১ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০১২। এই আয়োজনের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল “নলেজ টু প্রসপারিটি” বা সমৃদ্ধির লক্ষ্যে জ্ঞান। গত কয়েক মাসে আমরা ডুল্যান্সার নামক কিছু প্রতারক চক্রের কার্যক্রম লক্ষ্য করেছি। প্রতারিত হওয়ার পর বা অন্যকে প্রতারিত হতে দেখে অনেকেই এই শিক্ষা নিশ্চয়ই পেয়েছেন যে, তথ্য-প্রযুক্তি বা ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং খাতে জ্ঞান ছাড়া সেই সমৃদ্ধি বা সফলতা পাওয়া যায় না। আর সে জন্যই আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি, এবারের ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডের স্লোগান ছিল যথার্থ।

এবারের আয়োজনে প্রতিবারের মতো কেবল তরুণ প্রজন্মকে উৎসাহিত করা হয়েছে। কিন্তু আমরা যদি এই পরিধিকে আরেকটু বড় করি, তাহলে আমাদের প্রত্যাশা ও সম্ভাবনাও হয়ে ওঠে আরও বিস্তর।

ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং-এ বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণ সাম্প্রতিক সময়ে এক ধরণের বিপ্লবে রূপ নিয়েছে। বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ফ্রিল্যান্সিং বা আউটসোর্সিং-এ অংশগ্রহণের যেই অদম্য ঝোঁক লক্ষ্য করা যায় তা নিঃসন্দেহে দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে ও ভবিষ্যতেও রাখবে। গত কয়েক বছরেই বাংলাদেশে কেবল ফ্রিল্যান্সাররা আয় করেছেন ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আরও নতুনদের ফ্রিল্যান্সিং-এ অংশগ্রহণের ফলে এই অঙ্ক প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে।

আপনি অবাক হতে পারেন, কীভাবে এই বিপ্লব ঘটে গেল? গত বছরগুলোতে তো বাংলাদেশ সরকার এ দেশের মানুষকে ফ্রিল্যান্সিং-এ উদ্বুদ্ধ করেনি। বরং ফ্রিল্যান্সিং কাজে অংশ নেয়া ও অর্থ প্রাপ্তি ছিল বেশ ঝামেলার কাজ। কিন্তু সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ না থাকলে অনেকটা চুপিসারেই এ দেশের তরুণ ও বেকারদের মধ্যে এই ফ্রিল্যান্সিং বিপ্লব গড়ে উঠেছে। আর সরকারের গত কয়েক বছরের সব কিছুর পেছনে “ই” জুড়ে দেয়ার প্রচেষ্টায় এই ফ্রিল্যান্সিং পেয়েছে ব্যাপক সমৃদ্ধি।

কিন্তু কেন এমনটা ঘটেছে? আমরা যদি খুলনার পরিস্থিতির দিকে লক্ষ্য করি, তাহলে দেখবো সেখানকার অনেক শিল্পই বন্ধ হয়ে গেছে দুর্নীতি ও টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ার কারণে। সেখানকার ব্যবসায়ীরা খুব একটা ভালো নেই। আর তরুণ প্রজন্ম নিজেদের উন্নতির জন্য পড়াশোনার দিকে বেশি জোর দিয়েছে। কিন্তু পড়াশোনা শেষে বা এ সময়ে চাকরির বাজারের বেহাল দশা। শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন প্রজন্মকে প্রয়োজনমতো চাকরি দিতে পারছে না। আর এই প্রজন্মের তরুণদেরও খুলনা না ছেড়েই কিছু একটা করার প্রচেষ্টা ছিল। সেভাবেই ধীরে ধীরে ফ্রিল্যান্সিং জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

তবে ফ্রিল্যান্সিং-এর ক্ষেত্রে বেশ এগিয়ে গেলেও এখনও এই খাতে লেগে থাকা মানুষের দুর্দশা কমেনি। তারা এখনও অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এর মধ্যে একটি রয়েছে পেপাল পেমেন্ট গেটওয়ে সুবিধা। ফ্রিল্যান্সার ও আউটসোর্সিং পার্টনারদের যাবতীয় সুবিধাদি দেয়া গেলে দেশে এই খাত আরও অনেকখানি এগিয়ে যাবে। কিন্তু আমাদের দেশের সরকার কখনোই এসব ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকেনি। এসইএ-এমই-ডব্লিউই ফাইবার অপটিক ক্যাবল কানেকশন নেয়ার ক্ষেত্রে দু’বার পিছিয়েছে বাংলাদেশ। দেশের তথ্য বিদেশে পাচার হয়ে যাবে এমন অদ্ভূত যুক্তিতে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে সংযুক্ত হয়নি তখন।

বর্তমানে বাংলাদেশ তথ্য-প্রযুক্তির খাতে অনেক এগিয়ে আছে। বিশেষ করে ইন্টারনেটের দিক দিয়ে বেশ এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। কিন্তু সত্যিকারের অনলাইন সুবিধাদি এখনও এ দেশে পুরোপুরি চালু হয়নি। এমনকি আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের তুলনায়ও আমরা অনেকখানি পিছিয়ে আছি।

ফ্রিল্যান্সিং বা আউটসোর্সিং এমন একটি শিল্প যেখানে আয় হচ্ছে অবিশ্বাস্য ৩.৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। কিন্তু বাংলাদেশ এর ১ শতাংশও নিতে পারছে না। যদিও ঢাকা আউটসোর্সিং শহরগুলোর মধ্যে শীর্ষের দিকে আছে, তবুও সার্বিক বিবেচনায় অতোটা এগিয়ে নেই বাংলাদেশ। আজ আমাদের দেশে ফ্রিল্যান্সিং-এর যেই অবস্থা, ভারতে ১০ বছর আগে সেই অবস্থা ছিল। অর্থাৎ, আমরা ভারতের তুলনায় এখনও এক দশক পিছিয়ে আছি।

তবে তার মানে এই নয় যে, সবসময়ই ভারতের তুলনায় আমাদের এগিয়ে থাকতে হবে। আমাদের দেশে প্রতিভাবান ও অভিজ্ঞ মানুষ রয়েছেন যারা এই দেশকে ভারতের সমপর্যায় কেন, ভারতকে ছাড়িয়ে আরও বেশি অগ্রসর করে নিতে পারবে। কিন্তু এ জন্য তাদের প্রয়োজন সুযোগের। যদি আমরা তাদের সুযোগ করে দিতে পারলেই তারা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। আর এই সুযোগ আসতে হবে সরকার ও বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। যদি আমরা সেই সুযোগ তৈরি করতে না পারি, তাহলে ভিয়েতনাম বা ফিলিপাইনের মতো দেশগুলো এই খাতে রাজত্ব করেই যাবে। আর যদি আমরা সুযোগ তৈরি করতে পারি, যদি আমরা এই আউটসোর্সিং শিল্পের মাত্র ১ শতাংশও পেতে সক্ষম হই, তাহলে হয়তো পোশাক শিল্প বা প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের চেয়েও ছাড়িয়ে যাবে আউটসোর্সিং খাতে এ দেশের আয়ের অঙ্ক।

আপনি যদি আমাদের দেশের সমাজব্যবস্থার দিকে লক্ষ্য করেন, তাহলে দেখবেন অনেক পরিবর্তন সাধিত হওয়ার পরও আমরা খুব একটা স্বাধীন সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারিনি। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষ এখনও অনেক রক্ষণশীল। চলাচলের ক্ষেত্রে বাসে এখনও নারী-পুরুষ বিভেদে বসার ব্যবস্থা রয়ে গেছে। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর নারীরা এখনও সমাজে অবাধে চলাফেরা করতে পারেন না বললেই চলে। পড়াশোনার ক্ষেত্রেও নারীরাই ‘বাদ’ পড়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে। আর যারা কোনোভাবে পড়াশোনা চালিয়ে নিয়ে যান, তাদের মধ্যে বেশিরভাগের ক্যারিয়ারেরই ইতি ঘটে তাদের প্রথম বা দ্বিতীয় সন্তানের জন্মের পরপরই। ক্যারিয়ারের এই ইতিকে কেউ ভালো বা খারাপ বলে আখ্যায়িত করতে পারবেন না। কেননা, নারীর দ্বারা সন্তান বড় করে তোলা বহু শতাব্দীর পুরনো ঐতিহ্য। এমনকি উন্নত দেশেও নিম্ন ও মধ্যবিত্ত নারীরা সন্তান লালন-পালনের স্বার্থে ঘরেই থাকেন। সব মিলিয়ে দেখা যায়, একটি পর্যায়ে গিয়ে নারীর সব মনোযোগ ঘরেই সীমাবদ্ধ থেকে যায়।

অথচ আমাদের দেশের প্রায় ৪৮ শতাংশই নারী। আপনি যদি এই বিপুল শতাংশ জনশক্তিকে আয়ের জন্য কাজে লাগাতে না পারেন, তাহলে দেশের সার্বিক উন্নতিও অনেকখানিই পিছিয়ে যাবে। আর আমাদের সমাজব্যবস্থা অনুযায়ী মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণীর নারীকে ঘরে রেখেই অর্থ উপার্জনের ব্যবস্থা করে দেয়ার বোধহয় একটিই উপায় আছে। আশা করি আপনারা সবাই জানেন কী সেই উপায়।

আবার, আমাদের দেশে বয়স্করাও একটা সময় পর তাদের পরবর্তী প্রজন্মের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। শারীরিকভাবে কাজের চাপ নিতে না পারায় বা বয়সসীমা অতিক্রান্ত হয়ে যাবার ফলে তারা কেবল অন্যের উপর নির্ভরশীলই হয়ে পড়েন না, একই সঙ্গে দেশের অর্থ উপার্জনে লিপ্ত জনগণের মধ্য থেকে বাদ পড়ে যান যেখানে তারা আর কখনোই ফিরে আসেন না। আমরা কীভাবে সেসব বয়স্ক মানুষদের কোনো শারীরিক পরিশ্রমের চাপ না দিয়ে আবারও স্বনির্ভরশীল ও অর্থ উপার্জনে সক্ষম করে তুলতে পারি? আশা করি আপনি এই প্রশ্নের জবাবও জানেন।

অন্যদিকে আমাদের দেশে প্রতিবন্ধী মানুষের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। আমরা প্রায়ই ভাবি, আমাদের জনসংখ্যার সবচেয়ে দুর্বলতম অংশ হচ্ছে এই প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী। কিন্তু আমাদের মনে রাখা উচিৎ, সব প্রতিবন্ধী মানুষই কিন্তু সবদিক দিয়ে প্রতিবন্ধী নন। আমি এমনও শারীরিক প্রতিবন্ধকতার শিকার মানুষ দেখেছি যাদের রয়েছে অবিশ্বাস্য প্রতিভা, জ্ঞান এবং দক্ষতা। কিন্তু তারা অন্যদের মতো সাধারণ কর্মস্থলে চাকরি করতে পারেন না কেবল তাদের শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে। এই চিত্র বদলানোরও যেন কোনো উপায় নেই। কিন্তু আমরা কিন্তু তাদেরও দেশের অর্থোপার্জনে লিপ্ত জনগোষ্ঠীর আওতায় নিয়ে আসতে পারি। আর সেটাও কীভাবে সম্ভব তা আপনি ভাবতেই পারছেন।

আমরা সাধারণত ফ্রিল্যান্সিং বা আউটসোর্সিং নিয়ে কথা বলার সময় তরুণ প্রজন্মকেই বুঝিয়ে থাকি। হ্যাঁ, তারাই আমাদের দেশের ভবিষ্যত। কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং-এর কাজে যদি বেকার জনগোষ্ঠীর সবটুকুকে কাজে লাগানো যায়, তাহলে আমাদের দেশের অর্থনীতি কোথায় যেতে পারে তা ভেবে দেখুন।

কাজেই, বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর করতে হলে সরকারকে অবশ্যই এই শিল্পকে যত দ্রুত সমৃদ্ধ করে তোলা সম্ভব সে লক্ষে কাজ করতে হবে। আগেই বলা হয়েছে, এই খাতে অর্থ দেশে আনায় এখনও অনেক বড় বাধা রয়েছে। পেয়জা সাম্প্রতিক সময়ে চালু হলেও আন্তর্জাতিক বাজারে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় মাধ্যম পেপাল আসবো আসবো করেও দেশে এখনও আসেনি। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকও খুব একটা সক্রিয় ভূমিকা রাখছে না। তবে ইদানীং সবকিছু বেশ দ্রুত এগোচ্ছে তাই এই আশা করা যায় যে শিগগিরই আমরা পেপালসহ যাবতীয় সুবিধাদি উপভোগ করতে পারবো। হ্যাঁ, দেশে এখনও দুর্নীতিগ্রস্থ মানুষ রয়েছেন, মানি লন্ডারিং-এ লিপ্ত মানুষ রয়েছেন, কিন্তু তাদের জন্য পুরো জাতির সামনে পরে থাকা সুযোগ অপেক্ষা করতে পারে না।

গত ৮-১১ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০১২। এই আয়োজনের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল “নলেজ টু প্রসপারিটি” বা সমৃদ্ধির লক্ষ্যে জ্ঞান। গত কয়েক মাসে আমরা ডুল্যান্সার নামক কিছু প্রতারক চক্রের কার্যক্রম লক্ষ্য করেছি। প্রতারিত হওয়ার পর বা অন্যকে প্রতারিত হতে দেখে অনেকেই এই শিক্ষা নিশ্চয়ই পেয়েছেন যে, তথ্য-প্রযুক্তি বা ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং খাতে জ্ঞান ছাড়া সেই সমৃদ্ধি বা সফলতা পাওয়া যায় না। আর সে জন্যই আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি, এবারের ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডের স্লোগান ছিল যথার্থ।

এবারের আয়োজনে প্রতিবারের মতো কেবল তরুণ প্রজন্মকে উৎসাহিত করা হয়েছে। কিন্তু আমরা যদি এই পরিধিকে আরেকটু বড় করি, তাহলে আমাদের প্রত্যাশা ও সম্ভাবনাও হয়ে ওঠে আরও বিস্তর।

মূল লেখাঃ আসিফ আনোয়ার, বাংলাদেশ ইন্টারনেট মার্কেটিং কনসালটেন্ট।

*** Google এর সাম্প্রতিক Panda ও Penguin আপডেট

আমরা যারা SEO নিয়ে কাজ করি, তারা সবাই মোটামোটি Google এর সাম্প্রতিক Panda ও Penguin আপডেট সম্পর্কে জানি। এখনো অনেকে নিশ্চিত না যে আসলে এখন SEO করার সময় কি কি করা উচিত এবং উচিত না। কারন অনেক সাইট আছে যারা অনেক পরিশ্রম করেও কোন ফল পাচ্ছে না। হাজার হাজার backlink ও তাদের সাইট কে Google এ ভাল Ranking দিতে পারছে না। আমি আপনাদের সামনে একটি infographic নিয়ে এসেছি যা আপনাদের কাছে আগের এবং বর্তমান SEO technique এর পার্থক্য নিয়ে তৈরি। এই infographic টা ভালো ভাবে যদি আপনি study করেন, তাহলে আপনি আপনার site এর জন্য সফল ভাবে SEO করতে পারবেন। যারা freelancing এ SEO এর জাজ করেন, তাদের জন্য এটি উপকারি হবে বলে আশা করি।

Infographic টি এই ব্লগ থেকে নেয়া হয়েছে। যদি ভাল লাগে, comment এর মাধ্যমে জানাবেন।